স্থানীয় বা জাতীয় কোনো সমস্যার প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সংবাদপত্রের চিঠিপত্র কলামে এক ধরনের পত্র মুদ্রিত হয়। এসব পত্রের একটি শিরোনাম থাকে। এতে সাধারণত কোনো সম্বোধন থাকে না। তবে পত্রলেখকের নাম ও পরিচয় মুদ্রিত হয়। পত্রিকায় এই ধরনের পত্র পাঠাতে পত্রিকা-সম্পাদকের বরাবর আলাদা একটি চিঠি লিখতে হয়।
নিচে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্যে দুটি চিঠির নমুনা উল্লেখ করা হলো।
৩ জুন ২০২১
সম্পাদক
দৈনিক সমকাল
১৩৬ তেজগাঁও শিল্প এলাকা ঢাকা ১২১৫
বিষয়: 'চিঠিপত্র' কলামে প্রকাশের জন্য পত্র।
মহোদয়
আপনার বহুল প্রচারিত দৈনিকে সংযুক্ত পত্রটি প্রকাশ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাই।
বিনীত
জান্নাতুল মাওয়া
জুলগাঁও, শ্রীবর্দী, শেরপুর।
জুলগাঁও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে নজর দিন
শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার জুলগাঁও একটি সীমান্তবর্তী গ্রাম। দুই দশক আগে কমিউনিটি স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় পাহাড়-টিলা-বন পরিবেষ্টিত দুর্গম এ-অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। আশেপাশের ছয়টি গ্রামের দশ হাজার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানকার চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য অন্তত পাঁচ জন চিকিৎসক থাকার কথা, আছেন তিন জন; তাঁরাও নিয়মিত আসেন না। ভবনটিও সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। নিয়মিত ওষুধের সরবরাহ নেই। সাধারণ মানুষ যথাযথ চিকিৎসা না পেয়েই ফিরে যাচ্ছে। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা হয়তো জেলাশহরে বা ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দাবি, এই করুণ অবস্থা থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে রক্ষা করা হোক। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। যথাযথ কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে জুলগাঁও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির নিয়মিত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জুলগাঁও গ্রামের সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে।
জান্নাতুল মাওয়া
জুলগাঁও, শেরপুর।
২৫ এপ্রিল ২০১৯
সম্পাদক
দৈনিক প্রথম আলো
১৯ কারওয়ান বাজার ঢাকা ১২১৫ বি
ষয়: 'চিঠিপত্র' কলামে প্রকাশের জন্য পত্র।
মহোদয়
আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশের জন্য সড়ক-দুর্ঘটনার প্রতিকার সংক্রান্ত একটি পত্র এইসঙ্গে যুক্ত করা হলো। পত্রটি ছাপা হলে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে।
বিনীত
লিটন রোজারিও
নীলক্ষেত, ঢাকা।
সড়ক দুর্ঘটনার অবসান চাই
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রধান সমস্যা ও আতঙ্কের নাম সড়ক দুর্ঘটনা। প্রায়ই টেলিভিশনের পর্দায় ও পত্রিকার পাতায় চোখে পড়ে সড়ক দুর্ঘটনার মর্মান্তিক খবর। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন অনেক মানুষ আহত ও নিহত হচ্ছে। একটি পত্রিকার তথ্য মতে, ২০২০ সালে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় সাত হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। মৃত্যুর মিছিল যেন থামছে না। আহত অনেকে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। এই ধরনের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি এখন জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এর প্রতিকার জরুরি। প্রতিটি মানুষের প্রাণ মহামূল্যবান। তাই আমরা চাই না, সড়ক দুর্ঘটনায় আর একটি প্রাণও ঝরে পড়ুক। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বাস্তব ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। আমাদের দেশে সাধারণত কয়েকটি কারণে সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে থাকে; যেমন অনুপযোগী রাস্তা, ত্রুটিযুক্ত গাড়ি, অনভিজ্ঞ চালক, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ, ওভারটেকিং, ট্রাফিক আইন অমান্য করা ইত্যাদি। পথচারীদের ফুটপাত, জেব্রা ক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করার ফলেও অনেক সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। সমস্যা যেহেতু চিহ্নিত, সেহেতু এর থেকে মুক্তির পথ বের করা আমাদের জন্য মোটেই কঠিন হবে না। রাস্তাগুলোকে নিয়মিত সংস্কার করার পাশাপাশি প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। আমরা আশা করি, সমস্যা দূর করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
লিটন রোজারিও
নীলক্ষেত, ঢাকা।
আরও দেখুন...